নতুন জন্ম এবং পুনর্জন্মের পার্থক্য কী? ঈসায়ীরা কি পুনর্জন্মে বিশ্বাসী?

সংক্ষিপ্ত উত্তর:

ঈসায়ীরা তথাকথিত পুনর্জন্মে নয়, নতুন জন্মে বিশ্বাসী।

ব্যাখ্যামূলক উত্তর:

একটি প্রচলিত বিশ্বাস আছে যে, মানুষ মৃত্যুর পর যার যার কর্ম অনুযায়ী পুনরায় জন্মগ্রণ করেন। আর সেই জন্ম এরূপ যে, কেউ যদি ভালো জীবন যাপন করে, তবে সে আরো উন্নততর মানুষ হয়ে জন্মায়। আর যদি কেউ অপেক্ষাকৃত খারাপ জীবন যাপন করে, তবে সে অপেক্ষাকৃত নিকৃষ্ট জীবজন্তু হিসাবে জন্মায়। এই বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষ পুনর্জন্মে মানুষ হয়ে যেমন জন্মাতে পারে তেমনি হাতী, ঘোড়া, বাঘ, ভল্লুক, কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি হয়েও জন্মাতে পারে। অর্থাৎ এই বিশ্বাস অনুসারে, মানুষের পুনর্জন্ম কর্মের উপর নির্ভর করে।

ঈসায়ীরা এরূপ পুনর্জন্মে নয় বরং নতুন জন্মে বিশ্বাসী। এই বিশ্বাস উল্লেখিত বিশ্বাসের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ঈসায়ীদের বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষ কখনও পশু হয়ে জন্মাতে পারে না। আল্লাহ মানুষকে শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে নিজের সুরতে ও সিফতে সৃষ্টি করেছেন। অন্যান্য সৃষ্ট জীবের মধ্যে মানুষ অনন্যসাধারণ। অন্যান্য জিনিসকে আল্লাহ মুখের কথাতেই সৃষ্টি করেছেন কিন্তু মানুষকে নিজের হাতে ধরে সৃষ্টি করেছেন এবং ফুঁ দিয়ে তার মধ্যে প্রাণবায়ু দিয়েছেন। এছাড়া আল্লাহর কালাম অনুযায়ী মানুষ মৃত্যুর পরে শেষ বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে এবং শেষবিচারের পর, হয় বেহেশত না হয় দোজখ লাভ করে।

ইঞ্জিল শরিফে যে নতুন জন্মের কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ রুহানি অর্থে বলা হয়েছে। অর্থাৎ নতুন জন্ম হলো আত্মার নতুন জন্ম। হজরত আদমের গুনাহর মধ্যদিয়ে মানুষ মৃত্যু (রুহানি অর্থে) বরণ করেছে। এই রুহানি মৃত ব্যক্তিরা জীবিত মানুষের মতো আচরণ করলেও রুহানি দিক থেকে আল্লাহর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। এই মৃত আত্মাকে নতুন জীবন দেওয়াই হলো নতুন জন্ম। রক্তমাংসের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। এ হলো রুহানি জন্ম, আল্লাহ থেকে এ জন্ম হয়। আল্লাহর কালামে লেখা আছে, “তবে যত জন তাঁর (ঈসার) উপর ঈমান এনে তাঁকে গ্রহণ করল, তাদের প্রত্যেককে তিনি আল্লাহর সন্তান হবার অধিকার দিলেন। একদিক থেকে এই নতুন জন্ম হলো আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া একটি বিশেষ অধিকার।

উৎস: শত প্রশ্নের হাজার উত্তর, আবু তাহের চৌধুরী, ২০১০

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।