যাদু, তাবিজ, কবজ, ঝাড়-ফুক, মাজার-খানকা ইত্যাদি বিষয়ে ঈসায়ীদের দৃষ্টিভঙ্গি কী?

সংক্ষিপ্ত উত্তর:

ঈসায়ীরা এসবে বিশ্বাস করে না।

ব্যাখ্যামূলক উত্তর:

যারা যাদু, তাবিজ, কবজ, ঝাড়-ফুকে বিশ্বাসী, তারা প্রকৃত অর্থে আল্লাহর উপর আস্থা রাখে না। তাদের আচরণে প্রকাশ করে যে, আল্লাহর চেয়েও যাদু, তাবিজ, কবজ, ঝাড়-ফুকের শক্তি বেশি। কিন্তু আল্লাহ হলেন স্বগৌরব রক্ষণে উদ্যোগী আল্লাহ। আল্লাহ তাঁর পাওনা সম্মান কাউকে দেন না। আল্লাহর কালামে আল্লাহ নিজেই বলেন, “কোন জাদুকারিণীকে বেঁচে থাকতে দেবে না” (হিজরত ২২:১৮)। যাদুকরদের কাজ হলো নিজের চালাকি দিয়ে কিছু তৈরি করা বা কোনকিছু ঘটানো, যা অবিশ্বাস্য বা অলৌকিক এবং এর মধ্যদিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা ও কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষকে ঠকিয়ে পয়সা উপার্জন করা। আমরা জানি যে, আল্লাহ কোন কোন নবিকে বিশেষ উদ্দেশ্যে এমন মোজেজা দেখাবার ক্ষমতা দিয়েছিলেন। আর সেই ক্ষমতা ব্যবহার করার মধ্যদিয়ে, আল্লাহর গৌরব হয়েছে। মানুষ আল্লাহর ক্ষমতাকে জেনেছে। যেমন হজরত মুসা, হারুন, ইলিয়াস, আলিছা, শামূয়েল, ঈসা প্রমুখ নবিগণসহ আরো বেশ কয়েকজন নবিকে এরূপ কিছু ক্ষমতা আল্লাহ দিয়েছিলেন। যারা এসব অলৌকিক কাজ করেছেন। তারা সেসব কাজের মধ্যদিয়ে মহান আল্লাহর গৌরব বয়ে এনেছেন। মানুষ আল্লাহকে সম্মান ও ভয় করতে শিখেছে।

যারা রোগ-ব্যাধি, আয়-উন্নতি ইত্যাদির জন্য ভূতের আশ্রয় নেয়, তারা এসব কাজের মধ্যদিয়ে আল্লাহর অগৌরব করে। তারা তাদের এই কাজের মধ্যদিয়ে প্রকাশ করে যে, আল্লাহ তাদের রোগ-ব্যাধি থেকে সুস্থ করতে পারে না, আয়-উন্নতিও দিতে পারে না; বরং তাবিজ কবজ বা ভূতেরাই পারে। অথচ আল্লাহ তাঁর কালামে বলেন যেন আমরা মুনাজাতের মধ্যদিয়ে তার কাছে সরাসরি চাই। হজরত ঈসার উম্মতেরা তাঁর মধ্যদিয়ে, মুনাজাতের দ্বারা তাদের প্রয়োজনের কথা আল্লাহর কাছে বলার সুযোগ পেয়েছে। তাদের ভূতের কাছে যাবার কোন প্রয়োজন নেই। আল্লাহর কালামে লেখা আছে, “যারা ভূতের মাধ্যম হয় কিংবা যারা ভূতের সঙ্গে সম্বন্ধ রাখে তাদের কাছে যাওয়া চলবে না, কারণ তারা তোমাদের নাপাক করে তুলবে” (লেবীয় ১৯:৩১)। অতএব, যাদুবিদ্যা, ভূত-প্রেত-মাজার ইত্যাদির উপর বিশ্বাস এবং নির্ভরতা ঈসায়ীদের জন্য কোনভাবেই কাম্য নয়।

আল্লাহ মানুষকে তাঁর কালাম দিয়েছেন পড়ার জন্য এবং কালামে যা যা লেখা আছে তা নিজের জীবনে কাজে লাগানোর জন্য। আল্লাহ চান, তাঁর কালামের মধ্যে তিনি তাঁর যে ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন, তা যেন আমরা পালন করি। কিন্তু তা না করে যদি আমরা সেই কালামকে অথবা কালামে উল্লেখিত কোন গাছ অথবা তার শিকড়কে কিংবা কোন মাঝারের পানিকে, মাটিকে, তাবিজ-কবজ বানিয়ে গলায় ঝুলিয়ে রাখি বা হাতে বেঁধে রাখি তবে আল্লাহ অবশ্যই অসন্তুষ্ট হবেন।

উৎস: শত প্রশ্নের হাজার উত্তর, আবু তাহের চৌধুরী, ২০১০

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।